বিডি অফিসিয়াল জিরো টু ডেস্ক : কানাডা সফরে ওই দেশটির সঙ্গে ভিসা সহজীকরণ এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদারে গুরুত্বারোপ করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। স্থানীয় সময় গত বুধবার কানাডা সফরকালে তিনি ওই দেশটির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর আইএসপিআর গত ১৫ অক্টোবর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সেনাপ্রধানের যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সফর শুরুর কথা জানায়। সফরসূচি অনুযায়ী আজ শুক্রবার সেনাপ্রধানের দেশে ফেরার কথা।
কানাডায় বাংলাদেশ হাইকমিশন গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সরকারি সফরের অংশ হিসেবে স্থানীয় সময় বুধবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় পৌঁছান। কানাডার রাজধানী অটোয়ায় পৌঁছালে সেনাপ্রধানকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। কানাডার প্রিভি কাউন্সিল অফিসের পরিচালক ও বাংলাদেশে কানাডার মনোনীত হাইকমিশনার অজিত সিং এ অভ্যর্থনার আয়োজন করেন।
হাইকমিশন জানায়, জেনারেল ওয়াকারের এ সফরটি বাংলাদেশ-কানাডা সম্পর্কের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করার সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা সমস্যা সমাধানে উভয় পক্ষের আন্তরিক আগ্রহ প্রকাশ পায়।
সফরে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান কানাডার ভাইস চিফ অব দ্য ডিফেন্স স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল স্টিফেন আর কেলসি ও কানাডা-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের ভাইস চেয়ার সালমা জাহিদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন। আলোচনায় জেনারেল ওয়াকার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা সহজীকরণের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং চাকরিরত ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়াকরণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তিনি যুব উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকারের কথা তুলে ধরেন এবং উভয় দেশের পারস্পরিক সুবিধার কথা উল্লেখ করে আরো বেশি শিক্ষার্থী ভিসা দেওয়ার মাধ্যমে কানাডার সহায়তা কামনা করেন।
সালমা জাহিদ কানাডার বিদ্যমান আবাসন সংকটের প্রেক্ষাপটে চ্যালেঞ্জগুলোর কথা স্বীকার করেন। তিনি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দ্রুত ভিসা প্রক্রিয়াকরণের জন্য কানাডার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে উৎসাহিত করেন এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির সীমাবদ্ধতাগুলো মোকাবেলায় সমাধান খোঁজার জন্য প্রতিশ্রুতি দেন।
বৈঠকে কানাডা ও বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়। উভয় পক্ষ কৃষি ও অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতার সুযোগ খোঁজার জন্য সম্মত হয়।
জেনারেল ওয়াকার কানাডায় আবাসন সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশি সহায়তার প্রস্তাব দেন এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতে কানাডাকে সহায়তার জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করেন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেলসির সঙ্গে বৈঠকেও জেনারেল ওয়াকার কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত বাংলাদেশি সামরিক সদস্যদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়াকরণ সহজ করার পক্ষে কথা বলেন। এ ছাড়া দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তাদের পেশাগত উন্নয়নে সামরিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রশিক্ষণ বিনিময় বৃদ্ধির বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।
বৈঠকগুলোতে কানাডায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাহিদা সোবহান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম আসাদুল হক ও মেজর মো. শোয়েব রিফাত আউমি উপস্থিত ছিলেন।